ঢাকা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে তাণ্ডব, পিটিয়ে পুলিশ হত্যা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৫:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৫৩১ বার পড়া হয়েছে
দেশবর্ণ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
রাজধানীতে গতকাল শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের এক কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, একদল তরুণ তাঁকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এদিকে সংঘর্ষের সময় যুবদলের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে।

বিএনপির দাবি, পুলিশের হামলায় তিনি মারা গেছেন। তবে এই দাবি অস্বীকার করে পুলিশ জানিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিক, বিএনপির নেতাকর্মীসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ বক্স এবং যাত্রীবাহী বাসসহ অন্তত ২০টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় শতাধিক গাড়ি। সহিংসতার এ ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করে বিএনপি আজ রবিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। বিএনপির এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও একই দিন হরতালের ডাক দেয়। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম মো. পারভেজ।

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে তাঁর বাড়ি। গতকাল বিকেল ৪টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার ফারুক হোসেন পুলিশ সদস্য পারভেজ দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মাথায় গুরুতর জখম করা হয়েছিল।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘মৃত অবস্থায়ই ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। আমরা ইসিজি করার পর নিশ্চিত হয়ে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছি।’

গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ছাত্রদলের একজন নেতা আজ পুলিশের এক সদস্যকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কাছে ছবি আছে, ছাত্রদলের এক নেতা নৃশংসভাবে তাঁকে পিটিয়েছেন। শুধু পেটাননি, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মাথা ক্ষতবিক্ষত করেছেন।’

এদিকে বিএনপির দাবি, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির সহযোগী সংগঠন যুবদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম  শামীম মিয়া। তিনি রাজধানীর মুগদা এলাকার বাসিন্দা।

মুগদা থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি কাজী সুমন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শামীম মিয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের ১ নম্বর ইউনিটের সভাপতি ছিলেন।

তবে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক, উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. রেজাউল হায়দার শামীম মিয়াকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে এখানে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, শামীম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ ঘিরে আওয়ামী লীগ পাল্টা শান্তি সমাবেশের ডাক দেয়। বিএনপির সমাবেশের পাশে আরামবাগে জামায়াত ও আশপাশের এলাকায় সমমনা ১২টি দল সমাবেশের ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হলে জনমনে নানা আশঙ্কা তৈরি হয়।

একই দিন বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের সমাবেশের কর্মসূচি থাকায় সকাল থেকে ঢাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে তাণ্ডব, পিটিয়ে পুলিশ হত্যা

আপডেট সময় : ১১:১৫:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
রাজধানীতে গতকাল শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের এক কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, একদল তরুণ তাঁকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এদিকে সংঘর্ষের সময় যুবদলের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে।

বিএনপির দাবি, পুলিশের হামলায় তিনি মারা গেছেন। তবে এই দাবি অস্বীকার করে পুলিশ জানিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিক, বিএনপির নেতাকর্মীসহ দেড় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ বক্স এবং যাত্রীবাহী বাসসহ অন্তত ২০টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় শতাধিক গাড়ি। সহিংসতার এ ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করে বিএনপি আজ রবিবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে। বিএনপির এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও একই দিন হরতালের ডাক দেয়। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম মো. পারভেজ।

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে তাঁর বাড়ি। গতকাল বিকেল ৪টার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার ফারুক হোসেন পুলিশ সদস্য পারভেজ দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মাথায় গুরুতর জখম করা হয়েছিল।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, ‘মৃত অবস্থায়ই ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। আমরা ইসিজি করার পর নিশ্চিত হয়ে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছি।’

গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ছাত্রদলের একজন নেতা আজ পুলিশের এক সদস্যকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কাছে ছবি আছে, ছাত্রদলের এক নেতা নৃশংসভাবে তাঁকে পিটিয়েছেন। শুধু পেটাননি, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মাথা ক্ষতবিক্ষত করেছেন।’

এদিকে বিএনপির দাবি, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দলটির সহযোগী সংগঠন যুবদলের এক নেতা নিহত হয়েছেন। তাঁর নাম  শামীম মিয়া। তিনি রাজধানীর মুগদা এলাকার বাসিন্দা।

মুগদা থানা যুবদলের সাবেক সভাপতি কাজী সুমন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শামীম মিয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের ১ নম্বর ইউনিটের সভাপতি ছিলেন।

তবে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক, উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. রেজাউল হায়দার শামীম মিয়াকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে এখানে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, শামীম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ ঘিরে আওয়ামী লীগ পাল্টা শান্তি সমাবেশের ডাক দেয়। বিএনপির সমাবেশের পাশে আরামবাগে জামায়াত ও আশপাশের এলাকায় সমমনা ১২টি দল সমাবেশের ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হলে জনমনে নানা আশঙ্কা তৈরি হয়।

একই দিন বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের সমাবেশের কর্মসূচি থাকায় সকাল থেকে ঢাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়।