ঢাকা ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় এক আসামি গ্রেপ্তার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৫৫২ বার পড়া হয়েছে

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মো. মজলু মিয়া

দেশবর্ণ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় জোর করে বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ নগরের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

গ্রেপ্তার আসামির নাম মো. মজলু মিয়া (৫০)। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজার এলাকার প্রয়াত রজব তালুকদারের ছেলে। জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার সাত নম্বর আসামি তিনি। আগামীকাল বুধবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাউল ফকিরের মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে ধরে তিনজন লোক জোর করে চুল কেটে দিচ্ছেন। বয়স্ক মানুষটি অনেকক্ষণ চেষ্টা করে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অসহায় আত্মসমর্পণ করে বলেন, ‘আল্লাহ, তুই দেহিস।’ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

হেনস্তার শিকার ওই ব্যক্তির নাম হালিম উদ্দিন আকন্দ (৭০)। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে হালিম ফকির হিসেবেই চেনেন। প্রায় চার মাস আগের ওই ঘটনায় গত শনিবার বিকেলে তারাকান্দা থানায় একটি মামলা করেন হালিম উদ্দিনের ছেলে মো. শহিদ মিয়া আকন্দ। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়।

স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে মাথায় জট ছিল হালিম উদ্দিন আকন্দের। হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.)-এর ভক্ত তিনি। আগে পেশায় কৃষক থাকলেও এখন ফকিরি হালে আছেন। গত কোরবানির ঈদের কয়েক দিন আগে উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজারে হঠাৎ করে একদল লোক এসে তার মাথার জট, দাড়ি ও চুল জোর করে কেটে দেন। ঘটনার সময় বাধা দিতে গেলে তিনি শারীরিক নির্যাতন ও বলপ্রয়োগের শিকার হন। এ ঘটনার পর থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।

‘হিউম্যান সার্ভিস বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন ওই চুল কাটার কাজটি করেছিল। সংগঠনের সদস্যরা ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে এসে ওই কাজ করেন। সংগঠনটির প্রধান ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গামারীতলা গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন আশরাফীকে এ ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি করা হয়। আজ মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান গণমাধ্যমকে বলেন, বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় একজনকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আগামীকাল আদালতে সোপর্দ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় এক আসামি গ্রেপ্তার

আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ময়মনসিংহের তারাকান্দায় জোর করে বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে ময়মনসিংহ নগরের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

গ্রেপ্তার আসামির নাম মো. মজলু মিয়া (৫০)। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজার এলাকার প্রয়াত রজব তালুকদারের ছেলে। জোর করে চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলার সাত নম্বর আসামি তিনি। আগামীকাল বুধবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বাউল ফকিরের মতো দেখতে এক ব্যক্তিকে ধরে তিনজন লোক জোর করে চুল কেটে দিচ্ছেন। বয়স্ক মানুষটি অনেকক্ষণ চেষ্টা করে ছাড়িয়ে নিতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত অসহায় আত্মসমর্পণ করে বলেন, ‘আল্লাহ, তুই দেহিস।’ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

হেনস্তার শিকার ওই ব্যক্তির নাম হালিম উদ্দিন আকন্দ (৭০)। তিনি তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে হালিম ফকির হিসেবেই চেনেন। প্রায় চার মাস আগের ওই ঘটনায় গত শনিবার বিকেলে তারাকান্দা থানায় একটি মামলা করেন হালিম উদ্দিনের ছেলে মো. শহিদ মিয়া আকন্দ। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়।

স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে মাথায় জট ছিল হালিম উদ্দিন আকন্দের। হজরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (রহ.)-এর ভক্ত তিনি। আগে পেশায় কৃষক থাকলেও এখন ফকিরি হালে আছেন। গত কোরবানির ঈদের কয়েক দিন আগে উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজারে হঠাৎ করে একদল লোক এসে তার মাথার জট, দাড়ি ও চুল জোর করে কেটে দেন। ঘটনার সময় বাধা দিতে গেলে তিনি শারীরিক নির্যাতন ও বলপ্রয়োগের শিকার হন। এ ঘটনার পর থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।

‘হিউম্যান সার্ভিস বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন ওই চুল কাটার কাজটি করেছিল। সংগঠনের সদস্যরা ঢাকা থেকে ময়মনসিংহে এসে ওই কাজ করেন। সংগঠনটির প্রধান ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার গামারীতলা গ্রামের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন আশরাফীকে এ ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি করা হয়। আজ মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান গণমাধ্যমকে বলেন, বৃদ্ধের চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় একজনকে আজ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আগামীকাল আদালতে সোপর্দ করা হবে।