ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন যেন হয়ে ওঠে জাতির ঐক্য, আস্থা ও অগ্রযাত্রার প্রতীক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৩:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৬০০ বার পড়া হয়েছে
দেশবর্ণ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাতির সামনে আবারও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একাধিকবার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর ভাষায়এই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ। জনগণকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, এটি হবে ভোটের উৎসব, যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি এই বার্তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তবে তাঁর এক আক্ষেপও গুরুত্বপূর্ণকিছু শক্তি এখনো নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। এ উদ্বেগ অমূলক নয়। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংকট ও অস্থিরতার পর জনগণ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম একটি সত্যিকারের নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। তারা চায় একটি এমন পরিবেশ, যেখানে ভয়ভীতি ছাড়াই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারবে। ১৬ বছরের বেশি সময় পর এবার অনেক তরুণ প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেএটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

ইতোমধ্যে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, আরও কয়েকটিতে প্রক্রিয়া চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ অংশগ্রহণ আসলে একটি বৃহত্তর নির্বাচনের প্রস্তুতি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতারাও বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে বাংলাদেশের এই নির্বাচন হতে পারে এক ঐতিহাসিক বাঁকবদল। তাদের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট, রাষ্ট্র সঠিক পথে এগোচ্ছে

গত চব্বিশে আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে তিনটি মূল লক্ষ্য স্থির করেসংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন। এ তিন অঙ্গীকারের মধ্যে সংস্কারের নানা কার্যক্রম ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান। বিভিন্ন কমিশন গঠন করে অতীতের দুর্নীতি, গুম, খুন ও গণহত্যার দায় নির্ধারণের কাজ চলছে। বিচার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হলেও শুরু হয়েছেএটাই বড় অর্জন।

তবে এখন সময় এসেছে নির্বাচন আয়োজনের। কারণ গণতন্ত্রের সৌন্দর্য এখানেইজনগণের হাতে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া। অন্তর্বর্তী সরকারও সে ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাদের ভাষায়, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দেশের জন্য হবে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। সত্যিই তাইএকটি সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল সরকার গঠন করবে না, বরং তা জাতির গণতান্ত্রিক উত্তরণের নতুন যাত্রা শুরু করবে।

জাতির এই যাত্রা মসৃণ করতে হলে দরকার আস্থা, সংহতি ও সহনশীলতা। রাজনীতির আকাশে নানা সংশয় ও অবিশ্বাসের মেঘ জমেছে। এগুলো কাটাতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। নির্বাচনের মাঠকে যেন কেউ অস্থিরতার দিকে ঠেলে না দেয়, সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

আমরা যেনো ভুলে না যাইএ দেশের মানুষই গণতন্ত্রের প্রকৃত রক্ষক। তারা বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার আদায় করেছে। তাই জনগণের ওপর আস্থা রাখা দরকার। তারা জানে কোনটা দেশের জন্য ভালো। বহু কষ্ট ও প্রতারণার শিকার জনগণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভুল করবে না বলে প্রচন্ড ভাবে বিশ্বাস করি।

আসন্ন নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক পালাবদলের বিষয় নয়, বরং এটি জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এ পথেই নিহিত রয়েছে উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও মর্যাদার নিশ্চয়তা। তাই আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন যেন হয়ে ওঠে জাতির ঐক্য, আস্থা ও অগ্রযাত্রার প্রতীকএই প্রত্যাশাই সর্বসাধারণের।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন যেন হয়ে ওঠে জাতির ঐক্য, আস্থা ও অগ্রযাত্রার প্রতীক

আপডেট সময় : ০৮:৩৩:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জাতির সামনে আবারও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস একাধিকবার স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তাঁর ভাষায়এই নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ। জনগণকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন, এটি হবে ভোটের উৎসব, যেখানে প্রতিটি নাগরিক তার সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সম্প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকেও তিনি এই বার্তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তবে তাঁর এক আক্ষেপও গুরুত্বপূর্ণকিছু শক্তি এখনো নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। এ উদ্বেগ অমূলক নয়। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংকট ও অস্থিরতার পর জনগণ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম একটি সত্যিকারের নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। তারা চায় একটি এমন পরিবেশ, যেখানে ভয়ভীতি ছাড়াই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারবে। ১৬ বছরের বেশি সময় পর এবার অনেক তরুণ প্রথমবারের মতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেএটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।

ইতোমধ্যে দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, আরও কয়েকটিতে প্রক্রিয়া চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ অংশগ্রহণ আসলে একটি বৃহত্তর নির্বাচনের প্রস্তুতি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনপ্রণেতারাও বিষয়টি লক্ষ্য করেছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে বাংলাদেশের এই নির্বাচন হতে পারে এক ঐতিহাসিক বাঁকবদল। তাদের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট, রাষ্ট্র সঠিক পথে এগোচ্ছে

গত চব্বিশে আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে তিনটি মূল লক্ষ্য স্থির করেসংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন। এ তিন অঙ্গীকারের মধ্যে সংস্কারের নানা কার্যক্রম ইতোমধ্যেই দৃশ্যমান। বিভিন্ন কমিশন গঠন করে অতীতের দুর্নীতি, গুম, খুন ও গণহত্যার দায় নির্ধারণের কাজ চলছে। বিচার প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হলেও শুরু হয়েছেএটাই বড় অর্জন।

তবে এখন সময় এসেছে নির্বাচন আয়োজনের। কারণ গণতন্ত্রের সৌন্দর্য এখানেইজনগণের হাতে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া। অন্তর্বর্তী সরকারও সে ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাদের ভাষায়, ফেব্রুয়ারির নির্বাচন দেশের জন্য হবে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। সত্যিই তাইএকটি সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল সরকার গঠন করবে না, বরং তা জাতির গণতান্ত্রিক উত্তরণের নতুন যাত্রা শুরু করবে।

জাতির এই যাত্রা মসৃণ করতে হলে দরকার আস্থা, সংহতি ও সহনশীলতা। রাজনীতির আকাশে নানা সংশয় ও অবিশ্বাসের মেঘ জমেছে। এগুলো কাটাতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। নির্বাচনের মাঠকে যেন কেউ অস্থিরতার দিকে ঠেলে না দেয়, সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

আমরা যেনো ভুলে না যাইএ দেশের মানুষই গণতন্ত্রের প্রকৃত রক্ষক। তারা বহু সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ভোটাধিকার আদায় করেছে। তাই জনগণের ওপর আস্থা রাখা দরকার। তারা জানে কোনটা দেশের জন্য ভালো। বহু কষ্ট ও প্রতারণার শিকার জনগণ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ভুল করবে না বলে প্রচন্ড ভাবে বিশ্বাস করি।

আসন্ন নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক পালাবদলের বিষয় নয়, বরং এটি জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে জড়িত। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার এ পথেই নিহিত রয়েছে উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও মর্যাদার নিশ্চয়তা। তাই আসন্ন ফেব্রুয়ারির নির্বাচন যেন হয়ে ওঠে জাতির ঐক্য, আস্থা ও অগ্রযাত্রার প্রতীকএই প্রত্যাশাই সর্বসাধারণের।